আমরা কেন প্রাইজবন্ড কিনি?

আমরা কেন প্রাইজবন্ড কিনি?

আচ্ছা, বলুন তো—আমরা কেন প্রাইজবন্ড কিনি? বেশিরভাগ মানুষ এক বাক্যে বলবেন, "পুরস্কার জেতার জন্য।" এটি একদম সঠিক। প্রাইজবন্ড কেনার মূল উদ্দেশ্যই হলো পুরস্কার জেতা। তবে প্রশ্নটা একটু স্পেসিফিকভাবে করলে, উত্তরটা আরও চমকপ্রদ হতে পারে।

যদি জিজ্ঞেস করা হয়, কোন পুরস্কারের জন্য প্রাইজবন্ড কিনি? ৬ লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার, নাকি ১০ হাজার টাকার ৫ম পুরস্কার? নিশ্চয়ই আপনার উত্তর হবে, "৬ লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার!"

আমাদের সবার লক্ষ্য একটাই—৬ লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার জেতা। তবে, কখনো কি ভেবে দেখেছেন, এই ৬ লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার কতজন পায়? এখানে হয়ত কিছুটা দ্বিধা চলে আসবে। আসুন, বিষয়টি বিস্তারিতভাবে বুঝে নেওয়া যাক।

প্রতি সিরিজে কেবল একটি প্রথম পুরস্কার

প্রতি ১০ লাখ প্রাইজবন্ডের জন্য মাত্র একটি ৬ লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার দেওয়া হয়। অর্থাৎ, প্রতি সিরিজে থাকে কেবল একটিই প্রথম পুরস্কার।

বাংলাদেশে বর্তমানে ৮১টি সিরিজ চালু রয়েছে। এর মানে, সাম্প্রতিক ড্র’তে ৮১টি সিরিজের জন্য ৮১টি ৬ লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—প্রায় প্রতিটি ড্র’তে নতুন নতুন সিরিজের প্রাইজবন্ড চালু হয়। যখন কোনো নতুন সিরিজের ১০ লাখ প্রাইজবন্ড পুরোপুরি বিক্রয় হয়ে যায়, তখন সেটি পরবর্তী ড্রতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাই, নতুন সিরিজের প্রাইজবন্ড কিনলে ড্র’র জন্য অপেক্ষা কিছুটা দীর্ঘ হতে পারে।

প্রাইজবন্ড কেনা: শুধু পুরস্কার নয়, একটি স্বপ্নের টিকেট

প্রথমে আমরা বলেছিলাম, প্রাইজবন্ড কেনার উদ্দেশ্য পুরস্কার জেতা। তবে, এটি কেবল পুরস্কার নয়, বরং এটি একটি "স্বপ্নের টিকেট।"

একটি সিরিজে ১০ লাখ প্রাইজবন্ড থাকে, যার মধ্যে মাত্র একটি নাম্বর প্রথম পুরস্কার পায়। ভাবুন তো, সেই একটি নাম্বর যদি আপনার হয়! এটি আমাদের স্বপ্ন, আমাদের আশার প্রতীক।

তাই প্রাইজবন্ডকে অনেকেই "স্বপ্নের টিকেট" বলে থাকেন। এটি কেবল টাকা জেতার মাধ্যম নয়, বরং ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানোর এক রোমাঞ্চকর সুযোগ।

বাংলাদেশ ব্যাংক: শুধু প্রাইজবন্ড নয়, স্বপ্ন বিক্রেতা

বাংলাদেশ ব্যাংক যখন প্রাইজবন্ড বিক্রয় করে, এটি শুধু একটি টুকরো কাগজ বিক্রি করে না। এটি বিক্রি করে একটি স্বপ্ন, একটি আশা। এটি আপনাকে একটি সুযোগ দেয় এমন কিছু অর্জন করার, যা আপনার জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংককে আমরা স্বপ্ন বিক্রেতাও বলতে পারি। 

শেষ কথাঃ 

আমরা প্রাইজবন্ড কিনি পুরস্কারের আশায়। তবে এটি যেনতেন পুরস্কার নয়—৬ লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার জেতার আশায়। আমরা কিনি আমাদের ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য।

প্রাইজবন্ড কেবল একটি কাগজ নয়; এটি একটি স্বপ্ন। আর এই স্বপ্ন বাস্তব করার জন্যই আমরা প্রাইজবন্ড কিনি, বারবার চেষ্টা করি, এবং আমাদের আশা বাঁচিয়ে রাখি।

১,৯৭৮ মন্তব্য (০/০) ১৯ নভেম্বর ২০২৪

Latest Blog

প্রাইজবন্ড কিনতে কী কাগজপত্র লাগে?

প্রাইজবন্ড কিনতে সাধারণত কোনো কাগজপত্র লাগে না, নগদ টাকায় কেনা যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারি-বেসরকারি...

২৯ মে ২০২৫ ১,১৬৯

প্রাইজবন্ডের ড্র প্রক্রিয়া কতটা নিরপেক্ষ?

বাংলাদেশে প্রাইজবন্ড ড্র নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা যায়, যা এর স্বচ্ছতা নিয়ে সংশয় তৈরি করে। অসম্পূর্...

৩১ মে ২০২৫ ৭৮৮

প্রথম পুরস্কার বিজয়ী "সাইফ উদ্দীন রাজা"১১৪তম ড্র

সাইফ উদ্দীন রাজা, প্রাচুর্য ডট কমে তার প্রাইজবন্ডের নাম্বার এন্ট্রি করার পর জানতে পারেন যে তিনি ১১৪ত...

০৩ জুন ২০২৪ ৫,১১৭

কেন কিনবেন প্রাইজবন্ড?

সারাজীবন কষ্ট করে হয়ত কিছু টাকা জমিয়েছেন। কিন্তু কোথায় টাকা খাটাবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না। কারণ যে কো...

১৬ মে ২০২৪ ৩,১৩৮

প্রাইজবন্ড নাকি সঞ্চয়পত্র: কোনটা আপনার জন্য ভালো?

প্রাইজবন্ডে বড় পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা থাকলেও লাভের নিশ্চয়তা নেই। অন্যদিকে, সঞ্চয়পত্রে নিশ্চিত মু...

২১ আগষ্ট ২০২৫ ১৬২

প্রথম পুরস্কার পেয়েও তুলতে ব্যর্থ হলেন যেসব সৌভাগ্যবান বিজয়ী...

প্রাইজবন্ড, অনেকের কাছেই স্বপ্নের টিকিট। এক টিকিটে লুকিয়ে থাকে ৬ লাখ টাকার স্বপ্ন। কিন্তু বিশ্বাস ক...

২২ অক্টোবর ২০২৪ ৪,২৯৯

১১৬তম প্রাইজবন্ডের ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে।

৩১শে জুলাই ২০২৪, বুধবার প্রাইজবন্ডের ১১৬তম ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ড্র'তে মোট আশি সিরিজের প্রাইজবন্ডে...

৩১ জুলাই ২০২৪ ৩০,৮৯৩

প্রাইজবন্ড কেনার সময় ব্যাংকের রেজিস্টারে নাম এন্ট্রি করা হয়...

প্রাইজবন্ডকে লিকুইড ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যম হিসেবে ধরা হয়। তাই প্রাইজবন্ডের মালিকেরা এক ধরনের স্বাধীনত...

২৯ অক্টোবর ২০২৪ ২,১৮২

প্রাইজবন্ড কর্তৃপক্ষের প্রতি খোলা চিঠি

১৯৯৫ সালে প্রাইজবন্ড চালু হলেও, গ্রাহকবান্ধব সংস্কারের অভাবে জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। গ্রাহকদের ভোগান্ত...

২২ মে ২০২৪ ৪,১৬০

প্রাইজবন্ড সম্পর্কিত ব্লগ সমূহ