
জোড়া বন্ডের সুবিধা অসুবিধা:
আমরা জোড়া বন্ডের সুবিধা নিয়ে এর আগে অনেক আলোচনা করেছি। আজ আমরা জোড়া বন্ডের অসুবিধাগুলো নিয়ে বিস্তারিত কথা বলব।
যারা আমাদের চ্যানেলে নতুন, তাদের সুবিধার জন্য প্রথমে সংক্ষেপে বলে দিই জোড়া বন্ড কী?
সহজ কথায়, জোড়া বন্ড হলো একই নম্বরের দুটি ভিন্ন সিরিজের প্রাইজবন্ড। যেমন, আপনার কাছে যদি 'কক ০৩৩৮২৯১' এবং 'খফ ০৩৩৮২৯১' নম্বরের দুটি প্রাইজবন্ড থাকে, তাহলে এগুলোকে জোড়া বন্ড বলা হবে। এদের নম্বর এক হলেও সিরিজের অক্ষর (যেমন, 'কক' ও 'খফ') আলাদা।
প্রাইজবন্ডের ড্র একটি একক ও সাধারণ প্রক্রিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। এর অর্থ হলো, যখন একটি নির্দিষ্ট নম্বর (যেমন, '০৩৩৮২৯১') বিজয়ী হয়, তখন বর্তমানে প্রচলিত ৮২টি সিরিজের সবকটিতেই এই নম্বরটি বিজয়ী হিসেবে গণ্য হয়।
অর্থাৎ, যদি কোনো একটি নির্দিষ্ট নম্বর পুরস্কার জেতে এবং আপনার কাছে সেই একই নম্বরের ৩টি জোড়া বন্ড থাকে, তাহলে সেই তিনটি বন্ডই একই সাথে বিজয়ী হিসেবে বিবেচিত হবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনার কাছে যদি '০৩৩৮২৯১' নম্বরের ৩টি ভিন্ন সিরিজের ৩টি বন্ড থাকে, তাহলে আপনি একই সাথে ৩টি পুরস্কার পাবেন।
জোড়া বন্ডের তিনটি প্রধান অসুবিধা
১. পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা কমে যাওয়া:
জোড়া বন্ডের সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো, এতে পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা অর্ধেক হয়ে যায়। এর কারণ হলো, ড্রয়ের সময় আপনার দুটি আলাদা বন্ডের নম্বরকে একটি একক নম্বর হিসেবে ধরা হয়। যদি আপনার কাছে দুটি ভিন্ন নম্বরের বন্ড থাকে, তাহলে আপনার জেতার দুটি আলাদা সুযোগ থাকে। কিন্তু জোড়া বন্ডের ক্ষেত্রে, আপনার দুটি বন্ড মিলে একটি মাত্র সুযোগ তৈরি করে। তাই স্বাভাবিকভাবেই জেতার সম্ভাবনা অর্ধেক কমে যায়।
আবার, যদি আপনি পুরস্কার জেতেন, তাহলে দ্বিগুণ পুরস্কার পাবেন। এটি অনেকটা 'হাই রিস্ক, হাই গেইন' নীতির মতো, যেখানে ঝুঁকি বেশি নিলে প্রাপ্তিও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২. সংগ্রহ প্রক্রিয়া জটিল ও সময়সাপেক্ষ:
জোড়া বন্ডের দ্বিতীয় বড় অসুবিধা হলো এটি সংগ্রহ করা। অন্যের সাথে বন্ড অদলবদল করা বা ব্যাংক থেকে কিনে জোড়া মেলানো একটি বেশ জটিল এবং সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। অনেক সময় জোড়া বন্ডের জন্য মেসেজ পাঠিয়েও উত্তর পাওয়া যায় না, যা বেশ বিরক্তিকর। এই কাজটা সত্যিই অনেক ঝামেলার এবং কঠিন পরিশ্রমের। আমার পরিচিত অনেকেই আছেন, যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এই জোড়া বন্ড সংগ্রহ করেন। তাদের এই প্রচেষ্টা দেখলে বোঝা যায়, এটি কতটা ধৈর্যের কাজ।
৩. সংগ্রহের নেশা:
জোড়া বন্ড সংগ্রহের সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো এর নেশায় আসক্ত হয়ে পড়া। এই নেশাটা বেশ মারাত্মক। পুরনো কয়েন বা ডাকটিকিট জমানোর নেশার মতোই একবার ধরলে সহজে ছাড়া কঠিন। যারা এই নেশায় পড়েছেন, তারা এর তীব্র আকর্ষণ ভালো করেই বোঝেন। তবে, বাজে কোনো নেশার চেয়ে এই নেশা তো অনেক ভালো, কী বলেন? এই নেশার কারণে যদিও কিছু বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হয়, কিন্তু এর একটা নিজস্ব ভালো লাগা আছে যা অনেকেই উপভোগ করেন।
শেষ কথা
প্রাইজবন্ডের ড্র পুরোপুরিই ভাগ্যের উপর নির্ভরশীল। কারো ভাগ্য একবার ভালো হলে সবসময় ভালো নাও হতে পারে। তাই আমরা বলতে চাই, যদি ভাগ্য সহায় হয়, তবে একবারই হোক – একবারে দশটা পুরস্কার লাগুক! বারবার লাগার দরকার নেই।
আপনার কি জোড়া বন্ড নিয়ে কোনো ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে যা আপনি শেয়ার করতে চান?
Latest Blog
১৯৭৪ সালে ১০ টাকা ও ৫০টাকা মানের প্রাইজবন্ড চালু করা হয়েছিল কিন্তু ১৯৯৫ সালে ১০টাকা ও ৫০টাকার প্রাইজ...
১৭ মে ২০২৪ ৩,৭৭৮
১২০তম প্রাইজবন্ড ড্র-তে প্রাচুর্য ডট কমের ৬৯ জন সদস্য বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেছেন! আমাদের প্রত্যাশ...
৩১ জুলাই ২০২৫ ১৭৭,৬৫০
প্রাইজবন্ডে কোনো নির্দিষ্ট হারে সুদ বা মুনাফা দেওয়া হয় না, বরং লটারির মাধ্যমে পুরস্কার জেতার সুযোগ থ...
০২ জুন ২০২৫ ৭১৯
আমাদের প্রধান লক্ষ্য শুধু বর্তমান গ্রাহকদের উপর বার্ষিক চার্জের বোঝা চাপানো নয়, বরং একটি আকর্ষণীয়...
১৯ মে ২০২৫ ৭৬২
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে আপনি এবং আমার মতো সাধারণ গ্রাহক হিসেবে কল্পনা করুন। যেমন আমরা প্রাইজবন্ড কেনা...
২৬ মে ২০২৪ ২,৬২৪
শুধু যাদের সাথে আপনার জোড়া মিলবে তারাই আপনার ফোন নাম্বার দেখতে পাবে—অন্য কেউ দেখতে পাবে না। যদি তারা...
০৯ নভেম্বর ২০২৪ ২,৩৮৯
প্রাইজবন্ড হলো একটি সঞ্চয় প্রকল্প, যেখানে বিনিয়োগকারীরা নির্দিষ্ট সময় অন্তর লটারির মাধ্যমে পুরস্ক...
২৭ জুলাই ২০২৪ ২,২৭৯
শ্রোতাদের কথা: আমরা আমাদের গ্রাহকদের মতামতকে মূল্য দিই! ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম...
২৮ অক্টোবর ২০২১ ২,৮৫৬
প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের পরিমাণ বাড়ানোর একটি অনন্য কৌশল রয়েছে, যেখানে আপনি ৫০০ টাকার প্রাইজবন্ড তৈর...
২৫ আগষ্ট ২০২৪ ৪,৭৯৯